The Girl Who Leapt Through Time: লিপ ইনটু আ এডভেঞ্চার অফ আ লাইফটাইম

9:03:00 PM

[Originally Published in Mukh o Mukhos Online Magazine on January 2014 issue. Link: Here ]


হাইস্কুল লাইফটা মনে হয় প্রতিটা মানুষের জন্য সবচেয়ে আনন্দময় সময়।  হাইস্কুলে পড়ার সময় বড়দের কাছ থেকে শুনেছি, “মজা করার এখনই সময়।” আবার যখন কোন কিশোর উপন্যাসের রিভিউ পড়তে যাই তখন পাই, “এই উপন্যাস আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার স্কুলজীবনে। সেই সময়টাকে ফেরত পেতে চাইবেন।” উল্লেখ্য, কলেজ জীবনেও ওই বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের কাছ থেকে একই কথা শুনেছি, এমনকি এখন ভার্সিটি লাইফেও তাই শুনছি। আর এখনকার বিখ্যাত কিশোর উপন্যাসগুলো হাই স্কুলে হয় না। হয় কোন জ্বলজ্বল করতে থাকা ভ্যাম্পায়ারকে নিয়ে
হরর-রোমান্টিক বই, অথবা বারোজন শিশু-কিশোরের মর্টাল কমব্যাট।
কিন্তু জাপানিজ আনিমের ক্রিয়েটররা এখনো হাইস্কুলকে সেভাবে ভুলতে পারছেন না। বরং নানাভাবে তারা হাইস্কুলকে উপস্থাপন করে চলেছেন। কখনো একটি স্কুলের সব ক্ষমতার অধিকারী হয় স্টুডেন্ট কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট। আবার কখনো পুরো শহর জুড়ে শুধুই হাইস্কুল, আর তাই ওই শহরের নাম একাডেমী সিটি। যারা আনিমে নিয়মিত ফলো করেন তাদের জানা থাকার কথা জাপানিজরা তাদের হাইস্কুলকে কত ভালোবাসে! তাদের এই হাইস্কুলগুলোতে যেমন স্বাভাবিক মানুষ আছে, তেমনি আছে মেন্টালিস্ট, সিনথেটিক লাইফ ফর্ম অথবা টাইম ট্রাভেলার। এমনই এক হাইস্কুল পড়ুয়া টাইম ট্রাভেলারকে নিয়েই ২০০৬ সালে ডিরেক্টর মামুরো হোসোডা তৈরি করেছেন “দ্যা গার্ল হু লেপ্ট থ্রু টাইম”। আনিমে ফিল্মটি আবার ইয়াসুতাকা সুতসুই’র ১৯৬৭ সালের একই নামের কিশোর উপন্যাসের থিম অবলম্বনে করা হয়েছে। ইয়াসুতাকা সুতসুই সম্পর্কে আরেকটি তথ্য হলো, সাতোশি কন এর আনিমে ফিল্ম ‘Paprika’ তাঁরই ‘Papurika’ উপন্যাস অবলম্বনে বানানো।
ফিল্মের প্রধান চরিত্র মাকোতো কন্নো। সাধারণ জাপানি বালিকা। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠিকমত ব্রেকফাস্ট না করে স্কুলের জন্য দৌড়ানো তার নিত্যদিনের রুটিন (এবং সাম্প্রতিক সময়ে আনিমেগুলোতে অনেক ওভারইউজড)। স্কুলে তার বন্ধু চিয়াকি ও কিয়ুসুকে এর সঙ্গে বেসবল খেলা বা কোন বন্ধুকে প্রোপোজ করতে সাহায্য করাও যেন প্রতিদিনের বিষয়। আর বাসায় ছোটবোনের সঙ্গে খুনসুটিতো আছেই। কিন্তু এর মাঝেই একদিন ল্যাবে একটি এক্সিডেন্টের পর মাকাতো অবাক বিষ্ময়ে আবিষ্কার করে সে অতীতে যেতে পারে! এখন কি করা যায়? একজন আমেরিকান টাইম ট্রাভেলার এর জন্য লিঙ্কন বা কেনেডি এর অ্যাসানিনেশন বন্ধ করাটা একটা ভালো এবং অনেক বার করা হয়েছে এরকম একটা কাজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কোন কিছু পরিবর্তন করাও দারুন একটা কাজ হতে পারে। অথবা সে সময়ের হিরোশিমা বা নাগাসাকি এর বম্বিং থেকে মানুষকে রক্ষা করাও বেশ ভালো কাজ। কিন্তু  মাকোতোর জন্য কলেজে সায়েন্স পাওয়াটা খুবই  গুরুত্বপূর্ণ। তাই সে সময়ের পেছনে গিয়ে ক্লাস টেস্টগুলো আবার দিতে থাকে। এবং করতে থাকে আরও মজার মজার সব ঘটনা। কিন্তু এসবের মাঝেই একসময় সে বুঝতে পারে সে খুব বড় পরিবর্তন করে ফেলছে! এমনকি সামান্য স্বার্থপরতা অনেক ভয়ঙ্কর কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারে!
যে কোন হার্ডকোর আনিমে ফ্যানকে এই ফিল্মের ডেমোগ্রাফি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে কিছুক্ষণ চিন্তা করে উত্তর দিবে, “স্লাইস অফ লাইফ” এবং “শোজো” (অর্থাৎ এটি মেয়েদের জন্য বানানো)। উল্লেখ্য রুল অব থাম্ব হল, জাপানিজ আনিমেতে একটু বেশি পরিমাণ রোমান্স থাকলে সেটা শোজো জনারের। এই ফিল্মের ক্ষেত্রে কারণ হয়ত এর বড় অংশজুড়ে আছে তার “কোন বন্ধুর” প্রতি মাকোতো এর ফিলিংস কেমন তা নিয়ে দোলাচল। অনেক বড় একটা সময় ধরে মাকোতো দ্বিধাদ্বন্দ্বে থেকে অবশেষে মনে করে, “Sometimes all it takes to fall in love is the guts to try.” আমাদের দেশে প্রচলিত পশ্চিমা ডেমোগ্রাফি অনুযায়ী বলতে গেলে এটা একটা রোমান্টিক-কমেডি ফিল্ম, সঙ্গে আছে স্বল্পমাত্রার সায়েন্স ফিকশান। অনেকটা ‘Eternal Sunshine of the Spotless Mind’ এর মত, এবং অবশ্যই তা স্টোরিওয়াইজ নয়, জনারওয়াইজ। স্টুডিও জিবলি এর ‘Whisper of the Heart’ যারা পছন্দ করেন, এই গল্পের সঙ্গে তাদের মিশে যেতে খুব বেশিক্ষণ লাগবে না।
সিনেমার প্রধান চরিত্র মাকোতো, আর তাই ফোকাস তার উপরেই সবচেয়ে বেশি। মাকোতো এর


1486919_504697759650662_1115179765_n

ছোটবোন যদিও অল্প সময়ের জন্য স্ক্রিনে আসে, আপনার মনে হবে স্ক্রিনের উপরে পিচ্চিটাকে আদর করে দেই। তবে ইন জেনারেল, আনিমে এর বাচ্চাগুলো যথেষ্ট কিউট হয়। মাকোতো এর খালাও অতি অল্প সময় স্ক্রিনে আসলেও, বেশ লাইভলি আর উপন্যাসটি পড়া থাকলে আপনার বুঝতে দেরি হবে না যে, এই খালাই সুতসুকির বই এর প্রধান চরিত্র ছিলেন। সে দিক দিয়ে চিন্তা করলে এটি বইটির সিক্যুয়েল, কিন্তু বই এর গল্পের সঙ্গে এটির আর কোন সংযোগ নেই। মাকোতোর পরে ফোকাস করা হয়েছে মাকোতোর বন্ধু চিয়াকিকে। একটি বিশেষ দৃশ্য বেশ আকর্ষণ করে দর্শকদের। সেই দৃশ্যে চিয়াকি মাকতোকে প্রোপোজ করে, আর মাকোতো বার বার অতীতে গিয়ে এই ঘটনা পাল্টাতে চায়, কিন্তু প্রতিবারই কোন না কোনভাবে চিয়াকি একই কাজ করতে থাকে। এই দৃশ্যটা আমার মনে অনেকদিন মনের ভেতর গেঁথে যাওয়ার মত ছিল।
1557473_504697769650661_2029790740_n

আনিমের কথা বললে, এর এনিমেশন কোয়ালিটি নিয়েই কথা বলতেই হয়। এই ফিল্মটির কাজ হয়েছে এনিমেশন স্টুডিও ‘ম্যাডহাউজ’ এ। উল্লেখ্য  ডিরেক্টর সাতোশি কন এখানে কাজ করতেন। ম্যাডহাউজ তাদের দীর্ঘদিনের কোয়ালিটি এনিমেশনের দ্বারা একটি ব্র্যান্ডনেম প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। তাই কোন আনিমে ফিল্মের সাথে ম্যাডহাউজ সংযুক্ত থাকলেই এক্সপেক্টেশন অনেক বেড়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটা তারা পূরণ করতেও সক্ষম হয়। ‘দ্যা গার্ল হু লেপ্ট থ্রু টাইম’-এ তাই পাবেন ফ্লুইড এনিমেশন, লাইভলি ক্যারেক্টার, এবং ব্রিথটেকিং সিন। যদিও শেষ প্রশংসা ২০০৬ এ বেশ সত্য হলেও, বর্তমানে মাকতো শিনকাই তার ফিল্মগুলোর মাধ্যমে ‘ব্রিথটেকিং সিন’ এর সংজ্ঞা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। সে সময় জাপানে টু-ডির সঙ্গে থ্রিডি এনিমেশন মিশিয়ে কিছু একটা তৈরি করার প্রবণতা বেশ জোরেশোরে চলছিল (এখন এটা একটা কমন প্র্যাকটিস)। তবে আনিমে সিরিজে যেটা দায়সারাভাবে করা হত এখানে সেটাই অনেক মনোযোগ দিয়ে করা হয়েছে। তাই, খুব একটা খুঁতখুঁতে স্বভাব না থাকলে সেটা চোখে না পড়ারই কথা। আর মামুরো হোসডা এটার এনিমেশনে কোন কমতি রাখতে দেননি। এনিমেশন করা হয়েছে প্রধান চরিত্র মাকতো এর মুডের উপর লক্ষ্য রেখে। এবং এটা সুন্দরভাবেই খাপ খেয়ে যায়। কমেডি সিনগুলোতে কমেডিভাব বুঝানোর জন্য যেমন বডি/এক্সপ্রেশন ডিফর্ম ব্যাবহার করেছেন, কিন্তু সেখানে কোন অতিরঞ্জিত বিষয় নেই, তেমনি সিরিয়াস সিনগুলোতেও যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন, কিন্তু সেখানে এমন কোন সিরিয়াসনেস নেই যে আগের স্বাভাবিক সিনের তুলনায় বেখাপ্পা মনে হবে। মামুরো হোসডা তাঁর এই মুনশিয়ানা পরের মুভিগুলোতেও বজায় রেখেছেন। তবে একটা জিনিস লক্ষণীয়, ডিরেক্টর মামুরো হোসডা আর ক্যারেক্টার ডিজাইনার ইয়োশিইউকি সাদামোতো একসঙ্গে হোসোডার সবগুলো ‘অরিজিনাল’ সিনেমায় কাজ করায়, তাঁর ফিল্মগুলোয় ক্যারেক্টারদের ডিজাইন, এক্সপ্রেশন, এবং এক্সিকিউশন কিছুটা একই মনে হতে পারে। আগে হোসোডার কোন কাজ না দেখা খাকলে এই সিনেমার ক্ষেত্রে সেটা কোন প্রভাব ফেলবে না।
সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও যথেষ্ট মানানসই, কিন্তু মনে রাখার মত তেমন মিউজিক নেই। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক মূলত অর্কেস্ট্রা ও পিয়ানো ঘরনার।একটি বিশেষ মুহূর্তে ‘কাওয়ারানাই মনো’ ইন্সার্ট সংটা মনোযোগ দিয়ে শুনলে হয়ত সামনের কয়েকদিন গুনগুন করে গাইবেন অনেকেই।
খুব সাধারণ একটা প্লট সুন্দর ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে কাহিনীটাকে অসাধারণ করে তুলেছে। এত কথা বলার পর যেটা বলার দরকার তা হলো, এই ফিল্মের এন্ডিং নিয়ে একটা বিতর্ক আছে। কারো কাছে সেটা মেনে নেয়ার মত। কারো কাছে নয়।  যারা দেখবেন বা দেখেছেন এন্ডিংটা বিচার করার ভার তাদের উপরই ন্যস্ত থাকুক।
“You don’t get to choose when or who you meet, however, you do get to choose who you hold on to.”

You Might Also Like

0 comments

Popular Posts

Like us on Facebook

Flickr Images